গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার প্রহলাদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতির বিরুদ্ধে মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত নাহিদ হাসান মারতা গ্রামের বাসিন্দা এবং প্রহলাদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি।
ভুক্তভোগী ফাউগান গ্রামের বাসিন্দা মোসাঃ আনোয়ারা বেগম শ্রীপুর থানায় দায়ের করা লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত ৩০ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মোটরসাইকেলযোগে নাহিদ হাসান ও তার সঙ্গে থাকা দুই অজ্ঞাত ব্যক্তি তার বাড়িতে গিয়ে ৫ হাজার টাকা দাবি করেন। দাবিকৃত টাকা না দিলে তার ছেলে শাকিলকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন তারা। এর আগেও শাকিলের কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ২ হাজার টাকা আদায় করা হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
আনোয়ারা বেগম অভিযোগ করেন, টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে নাহিদ হাসান তার হাতে থাকা একটি আইটেল A70 মডেলের মোবাইল ফোন (আইএমইআই নম্বর: ৩৫৪৩৮৮২২১৩৯৩৩৮৩ ও ৩৫৪৩৮৮২২১৩৯৩৩৯১, সিম নম্বর: ০১৩২১৬৯৪০২১) ছিনিয়ে নেন। পরে স্থানীয়দের জানিয়ে কোন সুরাহা না পেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, নাহিদ এক সময় গাজীপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। পরবর্তীতে নাম পরিবর্তন করে ছাত্রদলে যোগ দেন এবং বর্তমানে ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা, চুরি ও ছিনতাইসহ নানা অপকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এলাকার মানুষ তার ভয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে সাহস পান না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক রাজনৈতিক নেতা বলেন, “নাহিদ আগে আওয়ামী লীগের একজন কর্মী ছিল, এখন ছাত্রদলের সভাপতি হয়ে নানা অপরাধে জড়িত। বিএনপির মতো দলের ভাবমূর্তি রক্ষায় এমন কাউকে দায়িত্ব দেয়া ঠিক হয়নি।”
এই বিষয়ে অভিযুক্ত নাহিদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জিয়াউর করিম মোড়ল রিফাত বলেন, “এই কমিটি ২০২২ সালে গঠিত হয়েছিল। নাহিদের আগের রাজনৈতিক পরিচয় ও বর্তমান অভিযোগ সম্পর্কে আপনারা বলার পরই জানলাম। আমি সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেবো।”
জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রানা প্রতাপ বলেন, “যোগ্যতা যাচাই না করেই তাকে পদ দেয়া হয়েছিল। এখন সে যেহেতু অপরাধে জড়িত, আমরা দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেবো।”
জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জাফর ইকবাল জনি বলেন, “দলীয় ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এমন কাউকে আমরা কখনোই সমর্থন করি না। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জয়নাল আবেদীন বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
Leave a Reply