নিজস্ব প্রতিনিধি:-
মতলব উত্তর উপজেলার বাগানবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপি’র অন্যতম নেতা কাজী আহম্মদ আলী নাগরিক এক্সপ্রেস কে সাক্ষাৎকারে বলেন, জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির রাজনীতিতে দুর্দিনে যারা ত্যাগীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন, সুযোগ সন্ধানী, অনুপ্রবেশকারী, হাইব্রিড মার্কা নেতাদের দাপটে তারা এখন কোণঠাসা। ত্যাগীদের প্রতি সংশ্লিষ্ট এলাকার দলীয় নেতারা মুখ ফিরিয়ে রাখেন। তাদেরকে আর এখন কাছে ভিড়তে দেয় না। তাদের ঘিরে রাখেন নব্য-সুযোগ সন্ধানী নেতারা। এতে দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত নেতারা ত্যাগের বিনিময় পাচ্ছেন লাঞ্ছনা-বঞ্চনা। অথচ নব্য বিএনপি এখন লুটেপুটে খাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, দুঃসময়ে যারা আন্দোলন-সংগ্রাম, মিছিলে শ্লোগানে শ্লোগানে রাজপথ কাঁপিয়েছিল তাদের অনেকের অবস্থা এখন করুণ। দলের দুঃসময়ে তৃণমূল নেতা কর্মীরা প্রতিপক্ষ দলের সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলা, মামলা ও নির্যাতনের স্বীকার হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর হাজার হাজার তৃণমূল নেতা কর্মী হয়েছিল এলাকা ছাড়া। স্ত্রী, সন্তান, পরিবার-পরিজন, বসত ভিটা এবং সম্পত্তি রেখে এলাকা থেকে পালিয়ে গিয়ে জীবন বাঁচিয়েছিল অনেকে।
এমনকি আওয়ামী লীগ সরকার আমলে পুরো ১৭ বছর এলাকা ছেড়ে থাকতে হয়েছে তৃণমূল নেতাকর্মীদের। অনেকের বৃদ্ধা মা, বাবাকে রেখে এলাকা ত্যাগ করতে হয়েছে। কারো বাবা-মা মারা গেলে জানাজায় অংশগ্রহণ তো দূরের কথা এলাকায় এসে দেখতে পর্যন্ত দেয়নি সেই পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনীরা।
দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ এই তৃণমূলের নেতা কর্মীরা আজও আওয়ামী লীগের আন্দোলন রাজনীতিতে বিশ্বাসী। শত জুলুম, অত্যাচার এবং নির্যাতন সহ্য করার পর তাদের দল ক্ষমতায় এসেছে। দল ক্ষমতায় আসার পরেও দুঃসময়ে নির্যাতিত অনেক ত্যাগী নেতাকর্মীদের জায়গা হয়নি দলে।
তৃণমূল ত্যাগী নেতাকর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, রাজনৈতিক হিংসাত্মক মনোভাবের কারণে তৃণমূলে থাকা ত্যাগী নেতাকর্মীরা আজ হারিয়ে যাচ্ছে। আন্দোলন সংগ্রামে যারা দলের জন্য কাজ করে নাই, বিভিন্ন কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে তাদের দলে মূল্যায়ন বেশি হয়েছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও ত্যাগী নেতাকর্মীরা কোন মূল্যায়ন পাচ্ছে না হাইব্রিড নেতাদের কারণে। অথচ দলের জন্য পূর্বে কোন ত্যাগের ইতিহাস নেই এসব সুবিধাবাদী নেতাকর্মীদের বিএনপিকে ভালোবেসে তারা এই দলের জন্য শ্রম দিয়েছে। তারা কোন মূল্যায়ন পায়নি।
তৃণমূল নেতাকর্মীরা সরকার বা দলের কাছে টাকা, পয়সা চায় না। নেতারা তাদেরকে একটু ভালোবাসা ও তাদের খোঁজ-খবর নিবে এটাই তৃণমূল নেতাকর্মীদের একমাত্র চাওয়া-পাওয়া।
সুবিধাবাদী নেতাদের কারণে তারা আজ অবহেলিত এবং অবমূল্যায়িত। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, বর্তমান রাজনীতিতে সুবিধাবাধী, মৌয়ালদের সমাগম ঘটেছে। অর্থের রাজনীতিতে বিশ্বাসী সুযোগ সন্ধানীরা রাজনীতিতে প্রবেশ করেছে। আর ঐসব অর্থের বিশ্বাসী রাজনীতিবিদদের কাছে তাদের দল ও জনগণ কেই নিরাপদ নয়। যতক্ষণ মধু আছে এরাও আছে, মধু নেই তো এরাও নেই, এরা যে কোন দলের জন্য অমঙ্গল বয়ে আনবে।
যেকোন রাজনৈতিক নেতাদের উচিত তৃণমূলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করা। একটি গাছের শেকর যেমন পুরো গাছের প্রাণ সঞ্চারে মূখ্য ভূমিকা পালন করে তেমনি দলের তৃণমূল পর্যায়ের ত্যাগী নেতাকর্মীরাও দলের জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে।
Leave a Reply