ওবাইদুর রহমান নয়ন,টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
কক্সবাজারের টেকনাফ থানাধীন সাবরাং মুন্ডার ডেইল এলাকায় বিদেশী জি-৩ রাইফেল, ম্যাগাজিন ও গোলাবারুদসহ এক যুবককে আটক করেছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড সদস্যরা। আটক যুবককে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তাঁর পরিবার।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ভোররাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার সাবরাং এলাকা থেকে জি-থ্রি রাইফেল, ম্যাগাজিন, গুলি ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এসময় মো. শহিদ নামে এক যুবককে আটক করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে কোস্টগার্ড ও আটক যুবকের পরিবার পৃথক পৃথক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
শনিবার বেলা ১১ টায় বাংলাদেশ কোস্টগার্ড টেকনাফ স্টেশন মিলনায়তনে অভিযানের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন, লে. এইচ এম লুৎফুল লাহিল মাজিদ।
সাংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, টেকনাফ সাবরাং এলাকার মো. শহিদ উল্লাহ দীর্ঘদিন যাবত পার্শ্ববর্তীদেশ মিয়ানমার থেকে অস্ত্র পাচার করে টেকনাফের চিহ্নিত ডাকাত দলের কাছে সরবরাহ করে আসছিলো। খবর পেয়ে রাত দেড়টা থেকে ভোররাত পর্যন্ত টেকনাফ বিসিজি স্টেশনের কোস্টগার্ডের সদস্যরা মো. শহিদ উল্লাহর বাড়িতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেন।
মাজিদ বলেন, অভিযানে রাত দেড়টার দিকে মো. শহিদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বস্তার ভেতর থেকে ১টি জি-থ্রি রাইফেল, ম্যাগাজিন, ৮ রাউন্ড তাজাগুলি ও ১টি দেশীয় চাপাতি উদ্ধার করেন। এসময় মো. শহিদ উল্লাহ (৩৭) কে আটক করতে সক্ষম হয়।
অপরদিকে আটক মো. শহিদ উল্লাহকে খালার বাসা থেকে ডেকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় ষড়যন্ত্রমুলক ভাবে ফাঁসানোর দাবী করে একই দিন বিকাল আড়াইটায় আবু ছিদ্দিক মার্কেটে পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করেন।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে আটক যুবকের ছোট ভাই মো. রাকিব উল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, কোস্টগার্ড টেকনাফ স্টেশনের কিছু সদস্য অভিযানের নামে রাতে অস্ত্র ও গুলি দিয়ে আমার ভাই শহিদ উল্লাহকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। সে একজন তেল ও রেস্টুরেন্টে ব্যবসায়ী। পাশাপাশি সে মুন্ডার ডেইল ঘাটের পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্বেও রয়েছেন।
তিনি বলেন, আটক শহিদ উল্লাহকে তাঁর ছোট খালার বাড়ি থেকে রাত ১০ টারদিকে মুঠোফোনে ডেকে আনে কোস্টগার্ড। এরপর কোন কিছু বুঝার আগেই ঘরে তল্লাশি চালায় তারা। ঘরে কিছু না পেয়ে পরে বাড়ী থেকে প্রায় ৮০-১০০ ফুট দূরে সুপারী বাগান থেকে বস্তায় মোড়ানো অস্ত্র নিয়ে আসে দুইজন কোস্টগার্ড সদস্য। ওই অস্ত্রের সাথে শহিদুল্লাহকেও আটক
আটক শহিদের স্ত্রী ই্য়াছমিন আক্তার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, স্থানীয় মাদক ও মানবপাচারকারী সাবেক ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন প্রকাশ দানু, আবদুল আমিন প্রকাশ রুল্ল্যা মাঝি ও শাকের মাঝির ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে আমার স্বামী।
ইয়াছমিন আরও বলেন, তাঁরা ষড়যন্ত্রপূর্বক সুপারী বাগানে তাদের পূর্বথেকে রেখে যাওয়া নিজেদের অস্ত্র দিয়ে আমার স্বামীকে ফাঁসিয়েছে। কোনক্রমে অবৈধ অস্ত্র, মাদক ও মানবপাচারের সাথে শহিদ জড়িত নয় বলে দাবী তাঁর।
ইয়াছমিন আক্তার এধরণের সাজানো, মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা থেকে অধিকতর তদন্তের মাধ্যমে শহিদকে অব্যহতি ও প্রকৃত দোষীদের শাস্তির দাবী করেন।
শনিবার বিকাল ৪ টার দিকে আটক মো. শহিদ উল্লাহ কে উদ্ধারকৃত অস্ত্র, ম্যাগাজিন, গুলি ও দেশীয় অস্ত্রসহ পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করেছে টেকনাফ কোস্টগার্ড়।
Leave a Reply