উপজেলা পর্যায়ে শিবচর দেশের প্রথম টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ স্থাপিত।
মোঃ রিগান আকন
শিবচর মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ
দেশের ১শ‘ উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন প্রকল্পের আওতায় প্রথম শিবচরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো: রেজাউল করিম তালুকদার টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ নির্মাণ শেষে উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে প্রথম কারিগরি শিক্ষায় সংযুক্ত করা হয়েছে ষষ্ঠ শ্রেনী থেকে পাঠদান। ৯ম শ্রেনী থেকে সংযুক্ত করা হয়েছে জুট প্রোডাক্টস, জেনারেল ইলেকট্রিকাল ওয়ার্কস, কম্পিউটার এন্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি ওয়েল্ডিং এন্ড ফেব্রিকেশন। উপজেলা পর্যায়ে এমন উদ্যোগ নেয়ায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী এমপি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, কারিগরি অধিদপ্তরের উদ্যোগে জানুয়ারী ২০১৪ হতে ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত মেয়াদে দেশের ৬৪ জেলার ১শ’ উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর। প্রতিটি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ নির্মাণে ২৩ কেটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয় ধরে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৩শ’ ৩৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। এই প্রকল্পের আওতায় দেশের প্রথম শিবচরের দ্বিতীয়াখন্ড ইউনিয়নে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো. রেজাউল করিম তালুকদার টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ নির্মাণের লক্ষ্যে ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর ২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়।
গত ২৯ নভেম্বর কলেজটি উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দিপু মনি। এ সময় চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী এমপি, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মির্জা আজম উপস্থিত ছিলেন। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষন সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেনী পর্যন্ত একটি কারিগরি বিষয় ও ৪টি ট্রেড অর্ন্তভুক্ত করে এসএসসি (ভোকেশনাল) এবং এইচএসসি (ভোকেশনাল) সার্টিফিকেট ও স্বল্প মেয়াদী প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালনার সুযোগ সৃষ্টি করবে। এই কারিগরি স্কুল ও কলেজটিতে ৬ষ্ঠ শ্রেনী থেকে দ্বাদশ শ্রেনী পর্যন্ত প্রতি শ্রেনীতে ১২০ জন করে সর্বমোট ৮৪০ জন শিক্ষার্থী লেখাপড়ার সুযোগ পাবে। ২০২১ সালের জানুয়ারী থেকে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হবে। শিক্ষার্থীরা ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম শ্রেনীতে অন্যান্য বিষয়ের সাথে ১টি কারিগরি বিষয় এবং ৯ম শ্রেনী হতে দ্বাদশ শ্রেনী পর্যন্ত জুট প্রোডাক্টস, জেনারেল ইলেকট্রিকাল ওয়ার্কস, কম্পিউটার এন্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি, ওয়েল্ডিং এন্ড ফেব্রিকেশন এই ৪টি ট্রেডে প্রতিবছর ১ হাজার ৩২০ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়ন করার সুযোগ পাবে। যাদের মধ্যে অন্তত ৯০ জন শিক্ষার্থী এসএসসি (ভোকেশনাল) ও ৮০ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি (ভোকেশনাল) সার্টিফিকেট অর্জন করবে। অর্থ্যাৎ এই প্রকল্পের ১শ’ কারিগরি স্কুল ও কলেজ থেকে প্রতি বছর কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত ও দক্ষতা সম্পন্ন প্রায় ১৭ হাজার শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে আত্মনির্ভরশীল হতে পারবে।
প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মোঃ মহসিন সরদার বলেন, টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজে এই প্রথম জুট প্রোডাক্টস সংযুক্ত করা হয়েছে। এখানে ষষ্ঠ শ্রেনী থেকে দ্বাদশ শ্রেনী পর্যন্ত পড়ার সুযোগ রয়েছে। আমরা ভর্তি প্রক্রীয়া শুরু করে সিরিয়াল রেখে দিচ্ছি। স্কুলে স্কুলে লিফলেট পাঠানো হবে।
চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপজেলা পর্যায়ে এমন উদ্যোগ নেয়ায় দক্ষ জনবল গড়ে উঠবে। এসকল দক্ষ জনগোষ্ঠি দেশ ও বিদেশের শ্রম বাজারে বিভিন্ন শিল্প কারখানায় নিয়োজিত হয়ে বাংলাদেশকে ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ন সহায়ক ভূমিকা রাখবে। দেশ ও বিদেশের শ্রম বাজারে চাকুরির সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে যুব সমাজকে উৎপাদনশীল দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত করবে। জীবিকা নির্বাহের জন্য দরিদ্র জনগোষ্ঠির আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
Leave a Reply